পিতামাতাকে সবক্ষেত্রে দায়ী না করার সাতটি কারণ
কিছুটা বড় হলেই সন্তান হিসেবে অনেকেই পিতামাতাকে তাদের জীবন বিষয়ে নানা দোষ-ত্রুটি ও ভুল সিদ্ধান্তের জন্য দায়ী করেন। নিজের জীবনের নানা সিদ্ধান্ত গ্রহণেও পিতামাতাকে দায়ী করেন অনেক সন্তান। বড় হয়ে যাওয়ার পরও এ দোষ-ত্রুটি ধরা থেকে বাদ যায় না পিতামাতারা। আপনার যদি এ অভ্যাস থাকে তাহলে এ লেখায় দেওয়া সাতটি পয়েন্ট পড়ুন এবং সিদ্ধান্ত নিন, পিতামাতাকে অতীত কর্মকাণ্ডের জন্য দায়ী করবেন কি না।
১. আপনি বড় হয়েছেন
পিতামাতাকে কোনো বিষয়ে দায়ী করার আগে এ বিষয়টি চিন্তা করে নিতে হবে যে, আপনি বড় হয়েছেন। এর আগে দীর্ঘদিন আপনার যে ভুলগুলো ছিল, সেগুলোর জন্য তাদের যে ভোগান্তি হয়েছে, তা নিয়ে কখনো কী ভেবেছেন?
আপনার সমস্যার জন্য পিতামাতাকে দায়ী করার আগে নিজের দায়টাও চিন্তা করতে হবে। আর তার পাশাপাশি চিন্তা করে নিতে হবে নিজের দোষ-ত্রুটিগুলোও।
২. তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টাই তারা করেছেন
পৃথিবীতে কোনো শিশু আসলে তার সঙ্গে কোনো লালন-পালনবিষয়ক ম্যানুয়াল আসে না। পিতামাতার জন্য কোনো নির্দেশিকাও থাকে না। তারা মানুষ। আর মানুষ মাত্রই ভুল হয়। তারা আপনার জন্য তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টাটাই করেছেন। তার পরও তারা নানা কারণে সম্পূর্ণ সফল হতে পারেন না। কিন্তু আপনার ভালোর জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করার পর, বহু সময় ব্যয় করার পরও আপনি যদি ছোটখাট ভুলের জন্য তাদের দায়ী করেন, তাহলে তা নিশ্চয়ই ভালো নয়।
পিতামাতাকে সবক্ষেত্রে দায়ী না করার সাতটি কারণ
৩. সবকিছু তাদের হাতে থাকে না
ছোট থাকতে শিশুরা তাদের পিতামাতাকে সবচেয়ে শক্তিশালী বলে মনে করে। সে অবস্থায় অনেক বিষয়ের জন্য তাদের দায়ী করা যায়। কিন্তু বড় হলে তারা বুঝতে পারে তাদের অতটা শক্তি নেই। আরও কিছুটা বড় হলে তারা বুঝতে পারে তাদের কোনো আলাদা শক্তিই নেই। আর অনেক বিষয়ের জন্য তাদের দায়ী করার কোনো ভিত্তি নেই। কারণ তারা সবকিছুর জন্য দায়ী নয়। বহু বিষয় থাকে তাদের নাগালের বাইরে। এসব বিষয়ের জন্য তাদের দায়ী করা বোকামি ছাড়া কিছুই নয়।
৪. দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিন
বহু তরুণ-তরুণী তাদের জীবনের নানা সিদ্ধান্তের জন্য পিতামাতাকে দায়ী করেন। তাদের জীবনের নানা ব্যর্থতার জন্য পিতামাতা দায়ী, এমনটাই দাবি তাদের। কিন্তু আপনি যদি বড় হয়ে থাকেন আর নিজের জীবনের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, তাহলে তাদের এ দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিন। তাদের চাপিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্তের বদলে আপনার সিদ্ধান্ত নিয়ে তাদের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
পিতামাতাকে সবক্ষেত্রে দায়ী না করার সাতটি কারণ
৫. ক্ষমাসুলভ দৃষ্টিতে দেখুন
ক্ষমা একটি মহৎ গুণ। তাদের ছোটখাট দোষ-ত্রুটি ক্ষমাসুলভ দৃষ্টিতে দেখাই মানবিকতার পরিচয়। এতে আপনি সুখী হতে পারবেন। আর যদি সারাক্ষণ পিতামাতার দোষ-ত্রুটি খুঁজে বেড়ান, তাহলে আপনার মানসিক শান্তি নষ্ট হবে। আপনি অন্যকে পরিবর্তন করতে পারবেন না। কিন্তু নিজেকে পরিবর্তিত করতে পারবেন বা পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারবেন।
৬. পিতামাতা নিখুঁত নয়
আপনার পিতামাতার ভুল হতে পারে। মানুষ মাত্রই ভুল করে আর এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। অন্যদিকে আপনি যদি সবকিছু ১০০ ভাগ সঠিক করার কথা চিন্তা করেন, তার পরও দেখবেন বহু ভুল হয়ে গেছে।
৭. অতীতমুখী নয়, সামনে তাকান
অতীতে আপনার পিতামাতা কোনো একটি ভুল করেছে, সে জন্য সারাক্ষণ আক্ষেপ করার কোনো কারণ নেই। অতীতের দিকে তাকিয়ে থেকে কোনো লাভ নেই। তার বদলে নিজের যা আছে, তাই নিয়ে সামনের দিকে পথ চলাই বুদ্ধিমানের পরিচয় বহন করে।
সূত্র: কালের কণ্ঠ অনলাইন
Comments